Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বাংলাদেশ কূটনীতি, ভারত বনাম পাকিস্তান

 বাংলাদেশ কূটনীতি, ভারত বনাম পাকিস্তান

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে সবসময়ই একটি প্রশ্ন আলোচনায় উঠে আসে—আসল বন্ধু রাষ্ট্র আসলে ভারত নাকি পাকিস্তান? মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট পর্যন্ত এই প্রশ্নের নানা মাত্রা রয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভিন্ন ভিন্ন পথে গড়ে উঠেছে। একদিকে ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান দীর্ঘ সময় সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় কার সঙ্গে সম্পর্ক বেশি কার্যকর এবং কে বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু—তা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা যাক।

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। তখন ভারত সরাসরি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্রসহায়তা, শরণার্থীদের আশ্রয় ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে ভারত স্বাধীনতার আন্দোলনে বড় ভূমিকা রাখে। ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া হয়তো স্বাধীনতা অর্জন আরও দীর্ঘ সময় লাগতে পারত। তাই মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের জনগণের কাছে ভারত প্রকৃত বন্ধু হিসেবে স্বীকৃত হয়।

ভারত: মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অবিচ্ছেদ্য বন্ধু

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সময়ে ভারত সরাসরি বাংলাদেশকে সহায়তা করে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সরবরাহ, শরণার্থী আশ্রয় ও কূটনৈতিক সমর্থন ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এই কারণে জনগণের কাছে ভারতকে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রকৃত বন্ধু হিসেবে দেখা হয়।

স্বাধীনতার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক

স্বাধীনতার পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক ক্ষেত্রে মধুর ছিল। তবে সীমান্ত সমস্যা, নদীর পানি বণ্টন ও বাণিজ্য বৈষম্য কিছু সময়ে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। তবুও ভারত সবসময় কূটনৈতিকভাবে সমর্থন দিয়ে এসেছে এবং বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের স্বার্থে পদক্ষেপ নিয়েছে।

পাকিস্তান: সম্পর্কের জটিলতা

১৯৭১ সালের গণহত্যা ও রাজনৈতিক অত্যাচারের কারণে পাকিস্তানকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা সহজ নয়। স্বাধীনতার পর পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে দেরি করেছে। বর্তমানে সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা থাকলেও জনগণের আস্থা এখনো পূর্ণ নয়। পাকিস্তান মূলত সীমিত বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা দিয়ে সীমাবদ্ধ।

বর্তমান কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট

বর্তমান সময়ে ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ও কৌশলগত মিত্র। ভারতের পণ্য, বিদ্যুৎ, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত সহায়তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাকিস্তানও কিছুটা সহযোগিতা বাড়াচ্ছে, বিশেষ করে খেলাধুলা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে, তবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীরতার কাছে এখনও তা নগণ্য।

জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি

বাংলাদেশের জনগণ ইতিহাস ও বাস্তবতার আলোকে ভারতকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নেতিবাচক আবেগের কারণে সীমিত। তবে নতুন প্রজন্ম ইতিহাসের ভার কম অনুভব করে এবং সম্পর্কের গুরুত্বকে প্রাধান্য দেয়।

উপসংহার

সব মিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের অবস্থান পাকিস্তানের তুলনায় অনেক বেশি দৃঢ়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অবদান অস্বীকার করা যায় না। পাকিস্তান এখনও আস্থা অর্জন করতে পারেনি। বাংলাদেশ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে দুই দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখছে, তবে প্রকৃত বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে পারস্পরিক সম্মান, সমঝোতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।

 আরও পড়তে ক্লিক করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ