Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য কি কি থাকছে এবার পে কমিশনে

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য কি কি থাকছে এবার পে কমিশনে

পে-কমিশনের বর্তমান তথ্য ও প্রস্তাবনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেওয়া হলো, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য কি কি থাকতে পারে এবার — সব তথ্য জনসাধারণের সংবাদসূত্র থেকে;

পে-কমিশন সংক্রান্ত প্রেক্ষাপট

জুলাই ২০২৫-এ গঠিত হয়েছে একটি জাতীয় পে-কমিশন, যার কাজ হবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন-ভাতা কাঠামো প্রস্তাব করা।

কমিশনের প্রধান হয়েছেন সাবেক অর্থ সচিব ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান

কমিশনকে ৬ মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট (প্রস্তাবনা সহ) সরকারের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।

কি কি বিষয় ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্তে এসেছে বা প্রস্তাবনায় রয়েছে

নিচের বিষয়গুলো পে-কমিশনের আলোচনায় এসেছে বা সাংবাদিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, যদিও সব কিছু চূড়ান্ত নয়:

বিষয়

বর্ণনা

নতুন বেতন কাঠামো (নতুন পে স্কেল)

সরকারি কর্মকর্তারা বর্তমানে ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুসরণ করছেন, নতুন পে-কমিশন সেই কাঠামো পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেবে যাতে মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় থাকে।

মহার্ঘ ভাতা দেওয়া

নতুন পে-স্কেল ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা (cost-of-living allowance) নিয়মিত দেওয়া হবে। 

ভাতা ও সুবিধাসমূহ পর্যালোচনা

বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ইত্যাদির মান বাড়ানো হতে পারে। বিভিন্ন ভাতার হার ও অগ্রাধিকার পুনর্বিবেচনায় আসবে। 

বয়স, পেনশন ইত্যাদির বিষয়

পেনশনভোগী, অবসরপ্রাপ্ত, বয়সসীমা, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদির বিষয়ে কিছু সুপারিশ আসতে পারে।

গ্রেড সংখ্যা ও গ্রেড ভিত্তিক বেতন পরিবর্তন

কিছু সংবাদসূত্র বলছে গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে আনতে হতে পারে এবং বেতন গ্রেড অনুযায়ী বিভিন্ন হার বাড়ানো হবে। 

অর্থনীতি ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনা

নতুন পে-স্কেল প্রস্তাবনায় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, সরকারের রাজস্ব গ্রহণযোগ্যতা এবং মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় থাকবে। 

যা এখনও নিশ্চিত নয় / চ্যালেঞ্জসমূহ

    ** নতুন বেতন কাঠামো কখন থেকে কার্যকর হবে — নির্বাচনের সময়, অর্থায়ন উৎস, বাজেট অনুমোদন এগুলো সবই নির্ধারিত নয়।


** বিভিন্ন দপ্তরে ও বিভাগে বেতন-ভাতার পার্থক্য রয়েছে; সব ক্ষেত্রে সমানভাবে সুবিধা পৌঁছাবে কি না তা জানার আশা করা যাচ্ছে।


** বাড়ি ভাড়া-ভাতা ও চিকিৎসা-ভাতা ইত্যাদির পরিমাণ কি হবে, কোন শহর/বিভাগ অনুযায়ী ভিন্ন হবে ইত্যাদি বিস্তারিত বিবেচনায় রয়েছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।


** সরকারি অর্থ খাত ও বাজেটের সক্ষমতা — বেশি ব্যয় হবে, তবে বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হলে রাজস্ব ও খরচের সামঞ্জস্য থাকতে হবে।

সম্ভাব্য প্রভাব

    ** সরকারি কর্মচারীদের প্রকৃত আয় বাড়বে, মূল্যস্ফীতি ও বেঁচে থাকার খরচ কিছুটা সামঞ্জস্যে আসবে।


** জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে, বিশেষ করে যারা ঢাকা বা বড় শহরে থাকেন তাদের বাড়ি ভাড়া ও যাতায়াত খরচেই বড় বোঝা।


** অবসরপ্রাপ্ত ও পেনশনভোগীদের জন্য ভালো পরিবর্তন হলে তারা আর্থিকভাবে অধিক নিরাপদ বোধ করবেন।


** তবে এই পরিবর্তন দ্রুত বা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলে কর্মচারীদের প্রত্যাশায় ফাটল পড়তে পারে।


সম্ভাব্য নতুন পে-স্কেল (গ্রেডভিত্তিক)

গ্রেড

বর্তমান (২০১৫ স্কেল অনুযায়ী) আনুমানিক মূল বেতন

সম্ভাব্য বৃদ্ধি

মন্তব্য

১ম গ্রেড

৭৮,০০০ টাকা (সর্বোচ্চ)

১৫–২০% বৃদ্ধি

সচিব/উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য; ভাতা ও গাড়ি সুবিধা পুনর্গঠন হতে পারে

২য়–৪র্থ গ্রেড

৪৫,০০০–৬৭,০০০ টাকা

১৫–১৮% বৃদ্ধি

যুগ্ম সচিব/অতিরিক্ত সচিব পর্যায়; হাউস রেন্ট ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবি

৫ম–৯ম গ্রেড

২২,০০০–৪৩,০০০ টাকা

১৮–২০% বৃদ্ধি

কর্মকর্তা স্তরের জন্য; অফিস ভাতা, যাতায়াত ভাতা নতুনভাবে নির্ধারণ হতে পারে

১০ম–১৬তম গ্রেড

১৬,০০০–২১,০০০ টাকা

২০–২৫% বৃদ্ধি

শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, উপসহকারী প্রকৌশলীসহ অনেক পদের জন্য বড় প্রভাব ফেলবে

১৭তম–২০তম গ্রেড

৮,২৫০–১৫,০০০ টাকা

২৫–৩০% বৃদ্ধি

নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের জন্য; বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি সামলাতে বড় হারে বাড়ানো হতে পারে

ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা

বাড়িভাড়া ভাতা: বড় শহরে (ঢাকা/চট্টগ্রাম) ভাড়া ভাতার হার বাড়ানো হতে পারে, কারণ বর্তমান ভাতা বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।


চিকিৎসা ভাতা: স্বাস্থ্যসেবা খরচ বেড়ে যাওয়ায় মাসিক ভাতা বাড়ানোর সুপারিশ থাকতে পারে, এমনকি স্বাস্থ্যবীমা চালুর প্রস্তাবও আছে।


যাতায়াত ভাতা: পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে এ ভাতা বৃদ্ধি সম্ভাবনা প্রবল।


পেনশন সুবিধা: অবসরের সময় গ্র্যাচুইটি ও মাসিক পেনশন হিসাব পুনর্নির্ধারণ হতে পারে।


মহার্ঘ ভাতা: নতুন পে-স্কেল কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

 সম্ভাব্য প্রভাব

 ** নিম্ন গ্রেডভুক্ত কর্মচারীরা সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেতে পারেন, কারণ তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপ তুলনামূলক বেশি।


** উচ্চ গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তারা মূল বেতনের পাশাপাশি ভাতা, গাড়ি, আবাসন ইত্যাদি সুবিধায় কিছু পরিবর্তন দেখতে পারেন।


  ** নতুন কাঠামো বাস্তবায়ন হলে অন্তত পরবর্তী ৮–১০ বছর সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা কিছুটা স্থিতিশীল থাকবে।

সম্ভাব্য নতুন বেতন কাঠামো (প্রস্তাবিত/আনুমানিক)

গ্রেড

বর্তমান (২০১৫ স্কেল অনুযায়ী) সর্বনিম্ন বেতন

সম্ভাব্য বৃদ্ধি হার

সম্ভাব্য নতুন বেতন রেঞ্জ

১ম

৭৮,০০০ টাকা

১৫–২০%

৯০,০০০ – ৯৫,০০০ টাকা

২য়

৬৬,০০০ টাকা

১৫–১৮%

৭৬,০০০ – ৭৮,০০০ টাকা

৩য়

৫৬,০০০ টাকা

১৫–১৮%

৬৪,০০০ – ৬৬,০০০ টাকা

৪র্থ

৫০,০০০ টাকা

১৫–১৮%

৫৮,০০০ – ৬০,০০০ টাকা

৫ম

৪৩,০০০ টাকা

১৮–২০%

৫০,০০০ – ৫২,০০০ টাকা

৬ষ্ঠ

৩৫,৫০০ টাকা

১৮–২০%

৪২,০০০ – ৪৩,০০০ টাকা

৭ম

২৯,০০০ টাকা

১৮–২০%

৩৪,০০০ – ৩৫,০০০ টাকা

৮ম

২৩,০০০ টাকা

১৮–২০%

২৭,০০০ – ২৮,০০০ টাকা

৯ম

২২,০০০ টাকা

১৮–২০%

২৬,০০০ – ২৭,০০০ টাকা

১০ম

১৬,০০০ টাকা

২০–২৫%

১৯,০০০ – ২০,০০০ টাকা

১১তম

১২,৫০০ টাকা

২০–২৫%

১৫,০০০ – ১৬,০০০ টাকা

১২তম

১১,০০০ টাকা

২০–২৫%

১৩,০০০ – ১৪,০০০ টাকা

১৩তম

৯,০০০ টাকা

২০–২৫%

১১,০০০ – ১২,০০০ টাকা

১৪তম

৮,০০০ টাকা

২০–২৫%

১০,০০০ – ১১,০০০ টাকা

১৫তম

৭,০০০ টাকা

২০–২৫%

৯,০০০ – ৯,৫০০ টাকা

১৬তম

৬,০০০ টাকা

২০–২৫%

৭,৫০০ – ৮,০০০ টাকা

১৭তম

৫,০০০ টাকা

২৫–৩০%

৬,৫০০ – ৭,০০০ টাকা

১৮তম

৪,৯০০ টাকা

২৫–৩০%

৬,০০০ – ৬,৫০০ টাকা

১৯তম

৪,৭০০ টাকা

২৫–৩০%

৬,০০০ – ৬,২০০ টাকা

২০তম

৪,৫০০ টাকা

২৫–৩০%

৫,৮০০ – ৬,০০০ টাকা

ব্যাখ্যা

উচ্চ গ্রেড (১–৪): সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা। তাদের মূল বেতন তুলনামূলক কম হারে (১৫–১৮%) বাড়তে পারে, কারণ তারা ইতিমধ্যেই গাড়ি, বাসা ও অন্যান্য সুবিধা পান।


মধ্য গ্রেড (৫–৯): কর্মকর্তা, সহকারী সচিব, শিক্ষক, প্রকৌশলী ইত্যাদি পদে বেতন ১৮–২০% পর্যন্ত বাড়তে পারে।


নিম্ন গ্রেড (১০–২০): কেরানি, দফাদার, পিয়ন, সহায়ক কর্মচারী ইত্যাদির বেতন ২০–৩০% পর্যন্ত বাড়ানোর সম্ভাবনা বেশি, কারণ মূল্যস্ফীতির ধাক্কা তাদের জন্য তুলনামূলক বেশি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ