Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ইসরাইলের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ফিলিস্তিন কে নিয়ে

 ইসরাইলের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ফিলিস্তিন কে নিয়ে



 ইসরাইলের বর্তমান ও ভবিষ্যতের কিছু পরিকল্পনা ও নীতি তুলে ধরা হলো, বিশেষ করে ফিলিস্তিনের বিষয়ে — আন্তর্জাতিক সংবাদ, বিশ্লেষণ ও বিভিন্ন নথিপত্রের ওপর ভিত্তি করে (২০২৫-এর সেপ্টেম্বর অবধি)। আপনাকে বলব এগুলো অনুমান নয়, কর্মকর্তাদের প্রকাশিত কথা, নীতি ও পরিকল্পনা থেকে মিলিয়ে নেওয়া তথ্য:

নীতি ও রাজনৈতিক বক্তৃতা

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন যে, “There will be no Palestinian state”, অর্থাৎ কোনো স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন হবে না তাঁর শাসনামলে।

তিনি ও তার প্রশাসন পশ্চিম তীর (West Bank) এবং পূর্ব জেরুজালেম (East Jerusalem) এলাকায় ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ (settlement expansion) ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাড়িয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোর ভূখণ্ডগত একতা নষ্ট হয় এবং স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা কমে যায়। 

ভূমির ব্যবহার ও বসতি সম্প্রসারণ (Settlement Expansion & E1 পরিকল্পনা)

E1 পরিকল্পনা (East 1): পশ্চিম তীরের Ma’ale Adumim ও পূর্ব জেরুজালেম সংলগ্ন ভূমিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইসরায়েল প্রায় ৩,৪০০ নতুন ঘর তৈরি করার অনুমোদন দিচ্ছে।

এই ধরনের বিন্যাস পশ্চিম তীরকে বিভাগ করার দিকে যায়, যা ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি এরিয়া গুলোকে বিচ্ছিন্ন করবে এবং পূর্ব জেরুজalemকে পশ্চিম তীর থেকে অর্থনৈতিক ও যাতায়াতের দিক থেকে আলাদা করে ফেলবে। 

রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের বসতি সম্প্রসারণের নীতি হলো “facts on the ground” তৈরি করা — অর্থাৎ, এমন বাস্তবতা তৈরি করা যা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আলোচনা কিংবা শান্তি প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ অনেক কঠিন করে দেবে। 

গাজা এবং পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ ও সামরিক পরিকল্পনা

গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে যা পুরো গাজা অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। 

এই অভিযান সময়সাপেক্ষ হতে পারে এবং এর পর “গাজা পুনর্গঠন” বা গাজার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদী ইসরায়েলি সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ থাকতে পারে। 

পশ্চিম তীরে, বাড়তি বসতি নির্মাণ ও বাস্তব ভূমি অধিকার ও যাতায়াত সীমাবদ্ধতা বিষয়ে সংক্রিয় পরিকল্পনা চলছে যা ফিলিস্তিনিদের দৈনন্দিন জীবন ও স্বাধীনতা আরও সীমিত করতে পারে। 

আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার বিষয়ক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক আদালত, মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশ এই বসতি সম্প্রসারণ ও নতুন নীতি সম্পর্কে সতর্কতা জানিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করছে। 

যুক্ত রাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশসহ অনেকেই “two‐state solution” বা দুই রাষ্ট্রের সমাধানের পক্ষ কথা বলছেন, যদিও বর্তমান ইসরায়েলের নীতি ও ঘোষণা সেই সমাধানকে খুবই অসম্ভব করে দিচ্ছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। 

ভবিষ্যতের সম্ভাব্য রূপ ও বিকল্প পথ

নিচে সম্ভাব্য কিছু রাস্তা ও বিকল্প যা আলোচনা হচ্ছে:

দুই রাষ্ট্র সমাধান (Two-state solution): যদিও নেতানিয়াহু সরকার নিশ্চিতভাবে এটি রদ করতে চায়, আন্তর্জাতিক চাপ ও শান্তিপ্রিয় শক্তির দাবি এখনও রয়েছে। তবে বর্তমান বসতি সম্প্রসারণ ও ভূমি অধিগ্রহণের নীতিগুলো এই চেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে। 

এক রাষ্ট্র বাস্তববাদ (One-state reality): এমন বিকল্প আলোচনা রয়েছে যেখানে পশ্চিম তীর ও গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিনি জমিকে ইসরায়েলের অধিকতর নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বল্প স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হতে পারে, তবে পুরোপুরি স্বাধীন রাষ্ট্র নয়। 

প্রশাসনিক আধিকারিক বিভাজন (Autonomous enclaves / শাসন-বিভাগ): কিছু পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে ফিলিস্তিনি এলাকায় ছোট ছোট স্বায়ত্তশাসিত শহর/প্রশাসনিক এলাকা গঠন করা যেতে পারে, যেখানে স্থানীয় প্রশাসন থাকবে, তবে নিরাপত্তা ও বড় নীতি নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকতে পারে।

মানবিক ও রাজনৈতিক চাপ: আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার সংগঠন, রাষ্ট্রগুলোর প্রতিক্রিয়া ও প্রেসার বাড়ালে নীতি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জনমতের পরিবর্তন ও কিছু অংশীদার দেশের মধ্যস্থতা ইত্যাদির মাধ্যমে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। 

সারাংশ ও চ্যালেঞ্জ

ইসরায়েলের বর্তমান নীতি ও প্রকাশিত পরিকল্পনাগুলো থেকে যা স্পষ্ট:

অংশবিশেষের লক্ষ্য হলো ফিলিস্তিনি জমির ভূখণ্ডগত একতা বিঘ্নিত করা — যাতায়াত, অবকাঠামো ও যোগাযোগের সক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া।

স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা ও দাবি ইসরায়েলের শীর্ষ রাজনীতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

গাজার নিয়ন্ত্রণ ও সব সামরিক ও নিরাপত্তা পরিকল্পনায় ইসরায়েল আরো স্থায়ী ও উপনিবেশক মনোভাব নিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক চাপ ও মানবাধিকার প্রশ্ন উচ্চমাত্রায় রয়েছে, যা নীতি-পরিকল্পনায় কিছু সীমাবদ্ধতা ও প্রতিহিংসার সম্ভাবনা তৈরি করছে।

আরও পড়তে ক্লিক করুন 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ