Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বিপুল ভোটে পাস হল স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব

বিপুল ভোটে পাস হল স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব 



ভূমিকা

ফিলিস্তিন ও ইস্রায়েল বিরোধ দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের সবচেয়ে জটিল রাজনৈতিক সংঘাতগুলোর একটি। সমস্যাগুলোর মূল — সীমান্ত, নিয়ন্ত্রণ, অনুপ্রবেশ, নিরাপত্তা, প্রত্যাবাসন, এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ সভায় এমন একটি প্রস্তাব overwhelmingly সমর্থন পেয়েছে, যা একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণাকে বাস্তবায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।

প্রস্তাবের সারাংশ

## এই প্রস্তাবটি “নিউ ইয়র্ক ডিক্লারেশন” নামে পরিচিত, যা ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সমবায় উদ্যোগে গৃহীত।

## এটি একটি দুই-রাষ্ট্র সমাধান (two-state solution) প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে — অর্থাৎ ইস্রায়েল ও ফিলিস্তিন দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে অস্তিত্ব লাভ করবে, শান্তি ও নিরাপত্তার শর্তসাপেক্ষে।

## প্রস্তাবনায় হাশিমি বরাদ্দ রয়েছে, যাতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (Palestinian Authority) গাজা ও পশ্চিম তীরে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে এবং হামাসকে (যদি প্রযোজ্য হয়) অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে ও তার শাসন থেকে সরে যেতে হবে।

## একটি স্থিতিশীলতা মিশন (temporary international stabilization mission) গঠন করার কথা বলা হয়েছে, যা শান্তি অক্ষয়ে, মানবাধিকার রক্ষায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে।

## প্রস্তাবনাটি চায় যে হামাসের অক্টোবর ২০২৩-র হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হোক, এবং যুদ্ধবিধি ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন যেমন নাগরিকদের প্রতি সহিংসতা ও অবরোধের মতো বিষয়গুলো বন্ধ হোক।

ভোটের ফলাফল ও বিন্যাস

## ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ সভায় ভোটে ১৪২টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে, মাত্র ১০টি দেশ বিপক্ষে, এবং ১২টি দেশ অনাস্থা ঘোষণা করেছে।

## ফলস্বরূপ, প্রস্তাবটি একটি “অবাধ্য-বাধ্য নয়” (non-binding) রেজোলিউশন হিসেবে গৃহীত হয়েছে — অর্থাৎ এটি আইনি বাধ্যবিধিমূলক নয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্ব বহন করে।

প্রতিক্রিয়া এবং তার প্রভাব

ফিলিস্তিন ও তার সমর্থকরা

## ফিলিস্তিন সরকার এই সমর্থনকে গুরত্বপূর্ণ একটি বিজয় হিসেবে দেখছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বৃহত্তর অংশের কাছে তাদের স্বীকৃতি এবং ন্যায্য অধিকারের দাবি জোরদার করবে।

## তারা ঘোষণা করেছে যে এই রেজোলিউশনের বাস্তবায়নের জন্য দেশগুলোর উদ্যোগ এবং চাপ অপরিহার্য। বিশেষ করে দখলদার শক্তি ইস্রায়েলের প্রতি আন্তর্জাতিক নিশ্চয়তা ও মানবিক চাহিদার দায়বদ্ধতা জোর দেওয়া হচ্ছে।

বিরোধীর দৃষ্টিভঙ্গা

## ইস্রায়েল এই রূপে ভোটকে “নাটকীয়”, একটি “প্রচারমূলক প্রক্রিয়া” বলে অভিহিত করেছে, যেহেতু এটি সরাসরি শান্তি আলোচনা বা দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তি তৈরি করছে না।

## যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে এই প্রস্তাবটি “অম্প্রচুর ও সময় সাপেক্ষ” এবং হয়তো শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।

সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ

## আইনি বাধ্যবিধিমূলক নয়: রেজোলিউশন হলেও, কোনো বাধ্যবিধিমূলক আইনগত বল নেই যা এটি প্রয়োগ করার জন্য বাধ্য করবে।

## বাস্তবায়নের রাস্তা জটিল: সীমান্ত, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ভঙ্গুরতা, নিরাপত্তার প্রশ্ন, প্রত্যাবাসন এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত উদ্বেগ ইত্যাদির কারণে দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা সহজ নয়।

## দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও ইস্রায়েলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন: ইস্রায়েলের অসমর্থন এবং হামাসের নিয়ন্ত্রণকৃত এলাকার বিষয়গুলো আলোচনার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

## আন্তর্জাতিক সুপরামর্শ ও সমর্থন জরুরি: শুধু ভোট নয়, বাস্তুর প্রয়োগে অর্থ, নীতি, নিরাপত্তা সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্থায়ী অবদান লাগবেই।

উপসংহার

এই রেজোলিউশনটি একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ইঙ্গিত যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে শুরু করেছে। যদিও এটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়, তবে রাজনৈতিক ও নৈতিকভাবে এটি একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করেছে শান্তি, ন্যায্যতা ও আন্তর্জাতিক নীতি মেনে চলার জন্য। যদি এ ধরনের উদ্যোগগুলি বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনায় রূপান্তরিত হয়, তবে এটি পশ্চিম তীর ও গাজা অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যতের পথ খুলে দিতে পারে।

আরও পড়তে ক্লিক করুন 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ