স্বাস্থ্য সহকারীদের কিছু কষ্ট
বাংলাদেশের সরকারী চাকুরীজীবিদের মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী জাতি সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার।১৬ তম গ্রেডে নিয়োগ।প্রমোশন হলেও বেতন গ্রেড বাড়ে না।প্রমোশন নাই,হলেও চাকুরী শেষ হওয়ার কিছু পূর্বে। নিয়মিত নিয়োগ নাই।প্রতি ৬০০০ হাজার জনগনের জন্য একজন স্বাস্থ্য সহকারী থাকার কথা। অথচ কিছু ক্ষেত্রেন ২০/৩০ হাজারের ও বেশি জনগনের ভার বইতে হয়।কিছু ক্ষেত্রে আরো বেশি। আরো কত যে কী।শুধু বৈষম্য আর বৈষম্য।
১৭ তম গ্রেডের শিক্ষকগন আজ কোথায়!?যারা পশুপাখিকে টিকা দেন, তাহারা আজ কত উপরে, টেকনিক্যাল পদমর্যাদাপ্রাপ্ত।
অথচ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ কে যারা টিকা দেয় তারা নন টেকনিক্যাল। কী আজব একটা সিস্টেম। কী বৈষম্য! (!)আরো কত কী।
স্বাস্থ্য খাতে যত ধরনের অর্জনের সিংহভাগ অবদান নিবেদিত প্রান স্বাস্থ্য সহকারীদের। টিকাদানে বিশ্বে রোল মডেল সহ কতশত অর্জনের মুল কিন্তু আমরা।
চাকুরীতে যোগদানের পর যখন দেখলাম এই পেশার মাধ্যমে জনসেবা করার সবচেয়ে উত্তম রাস্তা।পেশাকে ভালোলাগার শুরু তখন থেকে যখন দেখলাম,মানুষের মৌলিক চাহিদার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই "চিকিৎসা " চাহিদাটাই হলো মুল।একজন মানুষ যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না থাকে তাহলে সে মৌলিক চাহিদার কোনটাই গ্রহন করতে পারবে না।অথচ খাদ্য,বস্ত্র,কৃষি ও শিক্ষার কারিগরগন কত সম্মান ও মর্যাদার সহিত আছেন।আর আমরা, কত মানবেতর আছি।আমরা যে পজিশনে আছি স্যার সেটাকে কেউ হিসেবেই ধরতে চায়না।এ যেনো "ডিম পাড়ে হাসে,খায় বাগডাসে"।
দূর্যোগ,মহামারি সহ জনগনের দোড় গোড়ায স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেয়ার একমাত্র কারিগর এই স্বাস্হ্য সহকারিরা।কোভিডে কোটি মানুষকে টিকা দেয়া,হোম কোয়ারেন্টেনসহ যাবতীয় সেবাদাতার বৃহত দাবিদার।বিশেষ করে টিকাদানে শতভাগ কাজ আমাদের।কিন্তু আমাদের কোন নাম গন্ধই নাই।অথচ প্রচার প্রচারনা,সম্মান,মর্যাদা, সুযোগ সুবিধা নেন অন্যরা।দুখের কথা, আমাদের অধিদপ্তরই আমাদের পদবীর নাম কাজ কিছুই জানেন না।তাহলে মন্ত্রনালয়তো জানার কথা ই না।সবসময়ই আমাদের নাম কেউ বলেন না।অন্যদের নাম যশ প্রচার প্রচারনা হয় আমাদের কাজ ও পদের কাজের বিনিময়ে। অথচ এই কাজগুলো কিভাবে করতে হয় তারা জানেই না।
দুরদুরান্তে রোদবৃষ্টি ঝড়ে র তোয়াক্ক না করে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছাতে কখনো কোন গাফিলতি হয়না।যাতায়াতসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা যাদের এইসব জরুরি প্রয়োজন তারা না পেয়ে, সুযোগসুবিধা পায় অন্যরা।আর আামাদের শুধুই আশ্বাসের বানী শুনতে আছি দীর্ঘ বছর থেকে। আমাদের হাহাকার, কান্না কেউ শুনেন না।
প্রতিবার ই আমরা ব্যর্থ হই,ব্যর্থ করানো হয়(!) শুধুমাত্র একজন হৃদয়বান ও মানবিক অভিভাবকের অভাবে।
কত বলবো স্যার,বলার শেষ নাই।
অথচ এই পদবিধারীরা ন্যায্য দাবী আদায়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।আমরা এইবার আমাদের অধিকার আদায়ে বদ্ধ পরিকর।
0 মন্তব্যসমূহ