জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বেরিয়ে গেলেন অনেকে
বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম সংবেদনশীল ইস্যু হলো ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত। এই সংঘাত নিয়ে জাতিসংঘে বহুবার বিতর্ক হয়েছে এবং বিশ্বনেতারা বিভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বক্তব্য দিতে উঠলে এক নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তার বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান জানিয়ে একাধিক দেশের প্রতিনিধি হল থেকে বের হয়ে যান। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের মূল বিষয়
জাতিসংঘ অধিবেশনে নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইসরায়েল কেবল আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেন এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের যৌক্তিকতা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ইরানকেও তিনি হুমকি হিসেবে চিত্রিত করেন। নেতানিয়াহুর বক্তব্যে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপকে ন্যায্যতা দেওয়ার প্রবণতা স্পষ্ট ছিল।
প্রতিনিধিদের প্রতিক্রিয়া
কিন্তু তার বক্তব্য শোনার সময় বহু প্রতিনিধি অসন্তোষ প্রকাশ করে হল ত্যাগ করেন। ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা স্বাভাবিকভাবেই এই প্রতিবাদে শামিল হন। এছাড়া আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশ, আফ্রিকার কিছু প্রতিনিধি এবং লাতিন আমেরিকার কয়েকজন কূটনীতিক নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে একতরফা ও পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারা মনে করেন, ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে রেখেছে, আর সেই বাস্তবতা গোপন রেখে কেবল “সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান” নামে যুদ্ধকে বৈধতা দেওয়া যায় না।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সমালোচনা করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অনেক সংস্থা অভিযোগ তোলে যে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। একইসাথে সাধারণ মানুষ ও বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী। ফলে, নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সময় বহু প্রতিনিধি বেরিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুর গুরুত্ব
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট কেবল দুই জাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বিশ্ব শান্তি ও মানবিক ন্যায়ের সাথে জড়িত। জাতিসংঘে এ নিয়ে বহুবার প্রস্তাব পাশ হলেও ইসরায়েল নানা অজুহাতে সেগুলো মানেনি। ফিলিস্তিনি জনগণ বছরের পর বছর ধরে নিপীড়নের শিকার। তাদের ভূমি দখল, বসতি স্থাপন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, অবরোধ ও সামরিক হামলার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের কার্যকলাপকে আক্রমণাত্মক হিসেবে দেখে। এই বাস্তবতায় নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে অনেকে “সত্যকে আড়াল করার কৌশল” বলে অভিহিত করেছেন।
পশ্চিমা বিশ্বের বিভক্ত অবস্থান
তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, সব পশ্চিমা দেশ নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেনি। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ তার পাশে থেকে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার যুক্তি সমর্থন করে। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরও বিভক্তি আছে। কেউ কেউ ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করলেও অন্যরা নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে জাতিসংঘে প্রতিনিধিদের বেরিয়ে যাওয়াকে একধরনের প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হলেও, এটি এখনো বিশ্ব কূটনীতির ভারসাম্যে বড় কোনো পরিবর্তন আনেনি।
উপসংহার
জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বহু প্রতিনিধি বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ইসরায়েলের নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর বিরোধিতা আছে। যদিও কিছু দেশ ইসরায়েলের পাশে থেকেছে, তবুও বিশ্বের একটি বড় অংশ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং ইসরায়েলের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এই ঘটনা শুধু একটি কূটনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং এটি বিশ্ব রাজনীতিতে ফিলিস্তিন ইস্যুর গুরুত্ব আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।
জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য
নেতানিয়াহু UN ভাষণ
UNGA walkout
জাতিসংঘ অধিবেশন ইসরায়েল
নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান
জাতিসংঘে প্রতিনিধিদের বেরিয়ে যাওয়া
ফিলিস্তিন ইসরায়েল সংঘাত
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ২০২৫
নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ
কূটনৈতিক প্রতিবাদ জাতিসংঘ
জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান: প্রতিনিধিরা বেরিয়ে গেলে কী ঘটল
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যখন তাঁর ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন একাধিক দেশের কূটনীতিক এবং প্রতিনিধিরা হল ত্যাগ করে বাগ্জ নেন — একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক প্রতিবাদের প্রকাশ। এই অনুত্তরীয় মুহূর্তটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের প্রকট বিতর্ক ও বিভাজনকে পুনরায় সামনে সুপরিচিত করেছে।
কি ঘটল — সংক্ষেপে
বক্তৃতা শুরুর কয়েক মুহূর্তে ডেবেট হলের ডান-বাম দিকে চিৎকার, আপত্তি ও পরে উপস্থিত ধীরগতিতে লোকজন বেরিয়ে যেতে শুরু করে। অনেক সংবাদ সংস্থার লাইভ কভারেজে দেখা গেছে—দশ-দশের সংখ্যায় প্রতিনিধিরা আসন ত্যাগ করেছেন, এবং অনেকে এতে রীতিমতো প্রতিবাদী ইঙ্গিত রেখেছেন।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সারমর্ম
নেতানিয়াহু তাঁর ভাষণে ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডকে আত্মরক্ষার অনুষ্ঠেয় হিসেবে উপস্থাপন করেন, হামাসকে সন্ত্রাসী হিসেবে বর্ণনা করেন এবং কিছু পশ্চিমা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন যেগুলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র স্বীকৃতির দিকে অগ্রসর হয়েছে—সব মিলিয়ে তাঁর বক্তব্যে কড়া ভাষা ও রক্ষণশীল প্রতিপত্তি স্পষ্ট ছিল।
প্রতিনিধিদের কেন বেরিয়ে গেলেন?
প্রতিনিধিদের ত্যাগকে অনেকে রাজনৈতিক মর্যাদা ও নৈতিক প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে দেখেছেন—কারণ কিছু দেশের কূটনীতিক মনে করেন যে বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের কৌশল ও সামরিক অভিযানের কারণে বেসামরিক লোকেরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এবং এ ধরনের কষ্টের প্রেক্ষিতে নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে সমর্থনযোগ্য মনে করছেন না।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও প্রাসঙ্গিকতা
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জাতিসংঘের বাইরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে—মানবাধিকার সংগঠনগুলো, বিভিন্ন দেশের সরকারী বিবৃতি ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। একইসঙ্গে কিছু পশ্চিমা দেশের সমর্থনও লক্ষ্য করা গেছে, যা দেখায় যে বিষয়টা সমগ্র বিশ্বই একরূপভাবে দেখে না — বরং গভীর রাজনৈতিক বিভাজন বিদ্যমান।
সতর্কতা — ভিডিও ও ক্লিপের প্রসঙ্গ
একই সাথে অনুস্মারক যে, সামাজিক মাধ্যমের দ্রুত ছড়িয়ে পড়া অনেক ভিডিও ক্লিপ বা শর্ট ক্লিপ পুরনো কনটেক্সটে পুনরায় শেয়ার করা হতে পারে—আরও নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদনের সঙ্গে মিলিয়ে না পড়লে ভুল ফলাফল এড়ানো উচিত।
উপসংহার
জাতিসংঘে প্রতিনিধিদের এই প্রকার গণবহিষ্কার কেবল নাটকীয় ইশারা নয়—এটি কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ন সঙ্কেত, যা আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণ ও জনমতের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যু এখনও বিশ্ব মঞ্চে সরাসরি ও সংবেদনশীল হিসাবে বিদ্যমান; এমন ঘটনার ফলে বৈশ্বিক সমর্থন-প্রতিরোধের বলয় আরও পরিষ্কার হয়ে ওঠে।
.jpeg)
0 মন্তব্যসমূহ