অভিনেতা আরশ খান ফুসফুসে আক্রান্ত
ফুসফুস কি এবং কীভাবে কাজ করে?
ফুসফুস শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া এবং দেহে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়ার মূল অঙ্গ। ফুসফুসে বাইরের বায়ু থেকে অক্সিজেন বিনিময় হয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে দেয়া হয়।
. ফুসফুসের প্রধান রোগ বা সমস্যা এবং তা ব্যবস্থাপনা
বাংলা ভাষায় প্রধান রোগগুলির শ্রেণীবিন্যাস:
বন্ধনকারী (Obstructive) রোগ
হাঁপানি (Asthma), দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস, এমফাইসেমা, COPD (Chronic Obstructive Pulmonary Disease) – ব্রঙ্কিয়াল পথে সংকুচনের কারণে শ্বাসকষ্ট হয় ।
সীমাবদ্ধ (Restrictive) রোগ
ফুসফুস সঙ্কুচিত বা দাগ পড়া—যেমন পালমোনারি ফাইব্রোসিস, সারকোয়েডোসিস—কথা প্রসারণ ক্ষমতা কমে যায় ।
সংবহনের (Perfusion) রোগ
ফুসফুসে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা (উদাহরণ: pulmonary embolism, pulmonary hypertension)—ফুসফুস ঠিকঠাক কাজ করে না ।
৩. লক্ষণ ও উপসর্গ
শ্বাসকষ্ট (Dyspnea) – হাঁটার সময় বা হালকা পরিশ্রমেও শ্বাস নিতে সমস্যা হলে সচেতন হোন।দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা শ্লেষ্মা (প্রায় ১ মাস ধরে) – ফুসফুসজনিত সমস্যা নির্দেশ করতে পারে।রক্তাক্ত কাশি (Hemoptysis) – গুরুতর সমস্যা হতে পারে।সেকেন্ড-হ্যান্ড ধূমপান, অ্যাসবেস্টস বা রেডন মত পরিবেশগত কারণ – ফুসফুসের জন্য ঝুঁকি ।
৪. রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি
নির্ণয়:Spirometry – ফুসফুস ফাংশন টেস্ট করে রোগের ধরন নিরুপণ করা যায়।X-ray, CT Scan, ব্রংকোস্কোপি, রক্ত পরীক্ষা, ফুসফুস বা প্লুরাল বায়োপসি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় ।
চিকিৎসা: ব্রঙ্কোডাইলেটর – হাঁপানি বা COPD ক্ষেত্রে বাতাসের পথ খুলে দেয়।কর্টিকোস্টেরয়েড, অক্সিজেন থেরাপি ও Pulmonary Rehabilitation – প্রদাহ হ্রাস ও জীবনযাত্রা উন্নত করে ।সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি – ফুসফুসের ক্যান্সার বা টিউমর হলে প্রয়োগ করা হয় ।
৫. ফুসফুসকে সুস্থ রাখার কিছু টিপস (স্বাস্থ্যকর অভ্যাস)
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার, যেমন বেরি, সবুজ শাক, বাদাম, বীজ – ফুসফুসের টিস্যু সংরক্ষণে সাহায্য করে ।
আদা, লেবু, তুলসী, হলুদ, রসুন – প্রদাহ কমাতে ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে ।
কালোজিরা, যেন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে শ্বাসনালীর প্রদাহ রোধে সহায়ক ।
বাষ্প শ্বাস (Steam inhalation) ও উষ্ণ তরল – শ্লেষ্মা মুক্তিতে কার্যকর ।
সারসংক্ষেপ বিভাগ বিস্তারিত বিহিত তথ্য ফুসফুসের কার্য শ্বাসক্রিয়া এবং গ্যাস বিনিময়রোগের শ্রেণি Obstructive, Restrictive, Perfusion রোগ লক্ষণ শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, রক্তাক্ত কাশি নির্ণয় পদ্ধতি Spirometry, Imaging, Bronchoscopy ইত্যাদি চিকিৎসা ব্রঙ্কোডাইলেটর, স্টেরয়েড, রিহ্যাব, সার্জারি প্রতিরোধ খাদ্যাভ্যাস ও পরিবেশ সচেতন হতে হবে।
, অভিনেতা আরশ খান সম্প্রতি একটি ফেসবুক/সোশ্যাল মিডিয়া স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন—স্কুল জীবনে ‘ফ্লেক্স করার’ লক্ষ্যে বন্ধুদের সঙ্গে সিগারেট খাওয়া শুরু করেন এবং ১৯ বছর ধরে এই অভ্যাস চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে তিনি উল্লেখ করেছেন, “আমার ফুসফুসও প্রায় শেষের দিকে” ।
তিনি স্ট্যাটাসে আরও লিখেছেন যে, ১৯ বছরের ধূমপানের কারণে তার ফুসফুসে যে ১২টা বেজেছিল, তার ৩ গুণ বেজেছে গত ৬ মাসে । তাই তিনি সিগারেট ছাড়তে ভেপ (Vape) ব্যবহার শুরু করেন, কিন্তু তা সিগারেটের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর বলে অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তার কথায়, “ভেপের দ্বারা ফুসফুসের যে ক্ষতি হয় তার কোনো চিকিৎসা নেই, কোনো ওষুধ নেই। পুরো জীবনের জন্য ওই অংশ অকেজো।”
এছাড়া তিনি বলতেন, একটি ধূমপায়ী ব্যক্তি যদি ধুমপান ছাড়ে এবং ফুসফুসে বড় কোনো ক্ষত না থাকে, তবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ৯ মাস সময় লাগে, তবে প্রচলিত বিধিগুলি সব সময় স্থায়ী হয় না ।
সারসংক্ষেপে এই পোস্টের মূল পয়েন্টগুলো:
দীর্ঘসময় ধূমপান ১৯ বছর ধরে সিগারেটফুসফুসের অবস্থা “ফুসফুস প্রায় শেষের দিকে” বলে অভিজ্ঞতা ক্ষতির মাত্রা পূর্বের ১২ বেজ → ৬ মাসে ৩ গুণ বৃদ্ধি ভেপের ক্ষতি ভেপ ত্যাগের সময়েও ফুসফুসের ক্ষতির চিকিৎসা বা ওষুধ নেই—“ওই অংশ পুরো জীবন অকেজো”
সুবিধা কমানোর সময় যদি বড় ক্ষতি না থাকে, ধূমপান বন্ধের ৯ মাসে ফুসফুস কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে যদিও এই তথ্য থেকে সরাসরি নির্ণয় করা কঠিন।
0 মন্তব্যসমূহ